কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাগিনার হাতে মামার মৃত্যু হয়।২৩/০৬/২০২২ ইং রোজ বৃহস্পতিবার আনুমানিক বিকাল ৩:৩০ ঘটিকার সময় মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।
নিহত ব্যক্তি হচ্ছেন নাগেশ্বরী উপজেলা ৮নং হাসনাবাদ ইউনিয়নের দুই নাম্বার ওয়ার্ডের তেলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মরহুম আজাহার উদ্দিনের ছেলে মজুল্লা। আর তার বয়স আনুমানিক ৫৮ বছর। অনেক বয়স হওয়ার পরেও তিনি সুস্থ সবল জীবনযাপন করতেন এবং জীবিকার তাগিদে একজন নিয়মিত অটোচালক ছিলেন।
মৃত ব্যক্তির পরিবারে এক ছেলে সন্তান ও দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে।তিন সন্তানের মাঝে ছেলে সন্তান হচ্ছে দ্বিতীয়তম।তার নাম হচ্ছে হাবিব মিয়া। হাবিব জীবিকার তাগিদে দীর্ঘসময় ধরে বাড়ির বাইরে বিল্ডিং এর পানির লাইনের কাজ করে। চতুর্দিকে বন্যা হওয়ায় এখন সে বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে বাবা,মা,স্ত্রী, সন্তান কে নিয়ে সুন্দর জীবন যাপন করছে।
আসাদুল ইসলাম এবং মজির উদ্দিন সম্পর্কে মামা ভাগিনা।মজির উদ্দিন এর বাড়ির পাশে আসাদুলের মামার বাড়ির জমির অংশ হিসেবে প্রায় তিন থেকে চার শতক জমি রয়েছে। সেই জমিতে আসাদুল সীমানা ঘেঁসে সুপারির গাছ এবং ছোট আম কাঁঠালের গাছ রোপণ করেছে। রোপনকৃত গাছ মজুল্লার বাড়ির পাশে এবং রান্না ঘরের পিছনে অবস্থিত।কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ঝরে মজুল্লার রান্নাঘরের বাসের চালা খুলে যায়। খুলে যাওয়া বাসের চালা মেরামত করার জন্য আসাদুলের রোপন কৃত কাঁঠালের গাছ রান্না ঘরেই পাশে হওয়ায় চালে উঠতে অসুবিধা হয়।এজন্য সে আসাদুলের ছোট কাঁঠালের গাছ রশি দিয়ে বেঁধে হালিয়ে রাখে এবং বাসের চালা রান্নাঘরের উপরে তোলার চেষ্টা করে। বাসের চালা তুলে রশি দিয়ে বাধাই করার সময় আসাদুলের দৃষ্টি মজুল্লার উপর পড়ে। মজুল্লার বাড়ির পাশে আসাদুলের নিজ মায়ের বাড়ি অবস্থিত। কাঁঠালের গাছ হালিয়ে চালে ওঠার কারণে আসাদুল এবং তার দুই ছেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। মজুল্লা তাদের কথায় উত্তর দিলে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।একপর্যায়ে তারা মজুল্লাকে হাত দিয়ে শরীরে আঘাত করে। আঘাতের ফলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।এতে করে মজুল্লার স্ত্রী এবং ছেলের বউ ও ছোট মেয়ে বাধা দেয় কিন্তু তারা বাধা উপেক্ষা করে না।
তার ছোট মেয়ে রোজিনা খাতুন বলেন, আসাদুল ইসলাম ও তার দুই ছেলে মিলে আমার বাবার উপর অতর্কিত ভাবে আক্রমণ করে। এতেই আমার বাবা ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। আমার বাবার ওপর পরিকল্পিত ভাবে আঘাত করে আকস্মিকভাবে মেরে ফেলায় আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
ঘটনা বেগতিক হওয়াতে এলাকাবাসী নাগেশ্বরী থানায় ঘটনাটি জানায়।এতে করে নাগেশ্বরী থানার প্রশাসনিক কর্মকর্তাগন এবং ওসি মহোদয় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এলাকাবাসীকে শান্ত করেন। হাসনাবাদ ইউ পি চেয়ারম্যান মোঃ নুরুজ্জামান সরকার এর উপস্থিতিতে আলোচনা সাপেক্ষে মৃত ব্যক্তির লাশ থানায় নিয়ে যায়।
খুব দ্রুত গতিতে অপরাধীদেরকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।এস আই ফারুক,এ এস আই নাজমুল হোসাইন এবং তাদের ফোর্স সহকারে খুব দ্রুতগতিতে অপরাধীকে গ্রেফতার করে থানা হেফাজতে রাখে। এখন পর্যন্ত তিনজনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। ১/আসাদুল হক (৪৫) ২/আলামিন মিয়া(২৫) ৩/ আলমগীর হোসেন(২০)।
এতে এলাকাবাসী এবং ইউনিয়নের জনগণ সন্তুষ্ট। এখন সকলেই ন্যায় বিচারের অপেক্ষায়। মৃত ব্যক্তির ছেলে মোঃ হাবিব মিয়া বাদী হয়ে নাগেশ্বরী থানায় মামলা দায়ের করেন।